Monday, March 20, 2017

সাতক্ষীরার দেবহাটায় জলাশয়ের পাশে পাইলিং বসিয়ে রাস্তা সংস্কারের দাবি এলাকাবাসির



এস.কে কামরুল হাসান, সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি ঃ জলাশয় সংলগ্ন রাস্তার দু’পাশে পাইলিং না করে রাস্তা সংস্কারের প্রতিবাদ জানিয়েছে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলা সদর ইউনিয়নের ভাতশালা গ্রামের জনগন। তারা দরপত্র সংশোধন করে বাস্তবতার ভিত্তিতে এ রাস্তা সংস্কারের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাতক্ষীরা জেলা শাখার নির্বাহী প্রকৌশলীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের দেবহাটা উপজেলা উপসহকারি প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ভাতশালা গ্রামের রুমানা খাতুনের গরুর খাটাল থেকে ভাতশালা উত্তর পাড়া মহব্বতের বাড়ির মোড় পর্যন্ত দু’ কিলোমিটার ১০০ মিটার রাস্তা ছয় ফুটের স্থলে ১৬ ফুট করে বাড়ানো ও পাকা (পিচ) করার জন্য গত বছরের ২রা মে দরপত্র আহবান করা হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাতক্ষীরার মেসার্স শফি এন্টারপ্রাইজকে এক কোটি সাত লাখ ৩৪ হাজার ৩৭৭ টাকায় এক কাজ করার জন্য ওই বছরের ১৮ই মে কার্যাদেশ দেয়া হয়। তবে নির্ধারিত রাস্তার দু’পাশে প্রায় ৩০০ মিটার পুকুর ও জলাশয় থাকলেও সেখানে কোন পাইলিং করার কথা দরপত্রে উল্যেখ করা হয়নি। সরেজমিনে রোববার বিকেলে ভাতশালা গ্রামে যেয়ে দেখা গেছে ওই গ্রামের বিশ্বাস বাড়ির মোড় থেকে উত্তরপাড়া মহব্বত আলীর বাড়ি পর্যন্ত ৪০০ মিটার রাস্তার মধ্যে ৩০০ মিটার রাস্তার কোথাও এক পাশে আবার কোথাও দু’পাশে সরোয়ারের ঘের, নূর হোসেন, কাদিবিবি, আবু সাঈদ, হাকিম বিশ্বাস, খালেক বিশ্বাস ও বিশ্বাস বাড়ি জামে মসজিদের পুকুর রয়েছে। পুকুর বা চিংড়ি ঘেরের পাশ দিয়ে রাস্তা সংস্কার করতে হলে পাইলিং ছাড়া করা সম্ভব নয় বলে জানান ভাতশালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আজগার আলী, ইউপি সদস্য কামরুল ইসলাম, ইউপি সদস্য আব্দুল জলিল, ব্যবসায়ি জিয়াউর রহমান, আনছার আলী, আব্দুর জব্বার মল্লিক। তারা জানান, কার্যাদেশ পাওয়ার পর থেকে গত ১৫ মার্চ পর্যন্ত রুমানা খাতুনের গরুর খাটালের পাশ থেকে বিশ্বাস বাড়ির মোড় পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা ১৬ ফুট প্রশস্ত করে বক্স কেটে, বালি ও খোয়া ফেলে ড্রেসিং এর কাজ শেষ করেছেন ঠিকাদার।  ১৬ মার্চ তিনি বিশ্বাস বাড়ির মোড় থেকে মহব্বত আলীর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তার কাজ করার জন্য স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। পুকুর ও চিংড়ি ঘের সংলগ্ন জনস্বার্থে ব্যবহৃত রাস্তা সংস্কার বা বাড়ানোর কাজ পাইলিং ছাড়া করা যাবেনা বলায় তিনি গ্রামবাসির সঙ্গে সহমত পোষণ করে কাজ বন্ধ রেখেছেন। দেবহাটা সদর ইউপি চেয়ারম্যান আবু বক্কর গাজী জানান, ভাতশালা সীমান্তবর্তী একটি গ্রাম। এখানে রয়েছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি বাজার ও একটি বিজিবি ক্যাম্প। সেই হিসেবে বিশ্বাস বাড়ির মোড় থেকে বেড়িবাঁধ পর্যন্ত মজবুত রাস্তার অবশ্যই দরকার রয়েছে। যদিও উপসহকারি প্রকৌশলী সেলিম রেজা রাস্তা সংস্কারের আগে বাস্তবতা অনুযায়ী সবকিছু যাঁচাই না করেই দরপত্র আহবান করেছেন বলে তার মনে হয়েছে। কারণ ভারী যান বাহন চলাচলের সুবিধার্থে রাস্তা পাকা করণের আগে জলাশয় সংলগ্ন রাস্তার পাশে পাইলিং এর কোন বিকল্প নেই। পাইলিং ছাড়া রাস্তার উপর রোলার মেশিন চালালে রাস্তার বর্ধিত অংশ ও রোলার উভয়ই চলে যেতে পারে পুকুরের মধ্যে। তাই বরাদ্দ টাকা নষ্ট না করে দরপত্র পূর্ণমুল্যায়ন করে কাজ শুরুর জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে কথা বলবেন। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স শফি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী শফিউর রহমান জানান, জনস্বার্থে পাইলিং ছাড়া প্রায় ৩০০ মিটার রাসস্তার সংস্কার ও বাড়ানোর কাজ করা যাবে না মর্মে তিনি উপ-সহ প্রকৌশলী সেলিম রেজাকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। এর ব্যতিক্রম হলে রাস্তাা ভেঙে যেয়ে বরাদ্দের মোটা অংকের টাকা নষ্ট হবে। এতে তিনি তার সুনাম নষ্টের পাশপাশি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ  হবেন বলে জানান। স্থানীয় সরকার প্রশাসন অধিদপ্তরের দেবহাটা শাখার উপপ্রকৌশলী সেলিম রেজার কাছে সোমবার দুপুর সোয়া দুটোর সময় তার ০১৭১৬-৭৭৯০২৬ নং মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি রিসিভ করেননি। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাতক্ষীরা শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী বিজন কুমার কর্মকার জানান, তিনি মায়ের বার্ষিক মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাড়িতে গেছেন। সরেজমিনে ভাতশালায় যেয়ে পাইলিং এর প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি জেনে ব্যবস্থা নেবেন।


এস. কে কামরুল হাসান
জেলা প্রতিনিধি সাতক্ষীরা।
০১৭২৯৫৭৭৪১৬
২০.০৩.১৭






No comments:

Post a Comment